It is not cruelty to call a wife a ghost witch” observed the Patna High Court
দেশ
দ্যা হোয়াইট বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক:
স্বামী তাঁর স্ত্রীকে ‘পিশাচ-ডাইনি’ বলে ডাকতেই পারেন। শুধুমাত্র এহেন আচরণই স্ত্রীর প্রতি স্বামীর নিষ্ঠুরতা বলা যায় না। সম্প্রতি একটি বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ পাটনা হাইকোর্টের।
পাটনা হাইকোর্টে বৈবাহিক অশান্তি সংক্রান্ত একটি মামলা শুনানির জন্য ওঠে। সংশ্লিষ্ট মামলায় প্রথমেই স্ত্রীকে ‘পিশাচ’ বলায় স্বামী নিষ্ঠুর আচরণ করেছেন সওয়ালের এমন যুক্তি খারিজ করে দেন বিচারপতি। একইসঙ্গে উচ্চ আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, বৈবাহিক সম্পর্কে অনেক সময়েই স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করেন। কিন্তু এই ধরনের সমস্ত অভিযোগই নিষ্ঠুরতার মধ্যে আসে না।
বিয়ের পর থেকে মেয়ের উপর পণের দাবিতে অত্যাচার করা হত, এই অভিযোগে জামাইয়ের বিরুদ্ধে বিহারের নওয়াদার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে মামলা করেন শ্বশুর। সংশ্লিষ্ট মামলাটিতে বিচারপতি বলেন, স্ত্রী তাঁর সাক্ষ্য-প্রমাণে বলেছেন যে তিনি তাঁর বাবাকে একাধিক চিঠির মাধ্যমে নির্যাতনের বিষয়ে জানিয়েছেন। তবে মামলার বিচার চলাকালীন অভিযোগকারিনী একটি চিঠিও দেখাননি।
পুলিশের কাছে তরুণীর বাবা অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ, ৩২৩. ১২০বি, ৩৪৮ এবং ৩৮৬ ধারার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। তদন্ত শেষে পুলিশ অভিযুক্ত এবং ১১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়। আদালত মামলাকারীর জামাইকে দোষী সাব্যস্ত করে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই স্বামী পাটনা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ।
হাইকোর্টে মামলার শুনানিতে ওই ব্যক্তির আইনজীবী সওয়াল করেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ নেই। কে কখন পণ দাবি করেছিল বিশদে জানানো হয়নি। একইসঙ্গে স্ত্রী কীভাবে অত্যাচারিত হতেন সেবিষয়েও উল্লেখ করা হয়নি। এমনকী স্ত্রী কখনও শারীরিক অত্যাচারের প্রেক্ষিতে চিকিৎসকের কাছে যাননি বলেও অভিযোগ তোলেন স্বামীর আইনজীবী।
অন্যদিকে, অপরপক্ষের আইনজীবী বলেন, স্বামী এবং তাঁর পরিবার স্ত্রীকে ভূত-পিশাচ বলে ডাকতেন। তাঁর উপর ক্রমাগত নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে। এই যুক্তিতেই সহমত হননি বিচারপতি।
পাটনা হাইকোর্টের এই রায় প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন এই রায় একটি ঐতিহাসিক রায়। কারণ পরবর্তীকালে তদন্তকারী আধিকারিকরা কারোর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার আগে ভাববে শুধুমাত্র মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে কারোর বিরুদ্ধে 498A ধারা প্রয়োগ করা যায় না। এবং অভিযোগ এলে সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে অভিযোগের সত্যতা। এখানে যে ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তার কোন সাক্ষ্যপ্রমাণ মহামান্য আদালতে দেখাতে পারেনি তদন্তকারী আধিকারিকরা। সুতরাং এই অভিযোগকে আদালত খারিজ করে দেয়।