One country, one vote, despite strong opposition, calls for ex-president, Mamata on the way to Delhi.
দেশ
দ্যা হোয়াইট বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক:
সোমবার সন্ধ্যায় একদিনের জন্য দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মুখ্যমন্ত্রীর এবারের দিল্লি যাত্রা সেই অর্থে কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, তবে রাজনীতির বিষয় তো বটেই। কারণ মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি যাচ্ছেন ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ সংক্রান্ত হাইপাওয়ার কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতায় ফিরবেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মস্তিষ্ক প্রসূত এক দেশ এক ভোট!সারা দেশে একযোগে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন করানো যায় কি না সেটা খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দ্র সরকার একটি হাইপাওয়ার কমিটি তৈরি করেছে। আট সদস্যের এই কমিটির চেয়ারম্যান প্রাক্তণ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ। কমিটিতে রয়েছেন কেন্দ্রিয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরী, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ, বিশিষ্ট আইনজীবী হরিশ সালভে প্রমুখ। ইতিমধ্যেই এই কমিটি বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে। সূত্রের খবর, প্রাক্তণ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের ঘোষণার আগেই কেন্দ্রকে কমিটির রিপোর্ট পেশ করতে চাইছেন। সেই কারণেই দেশের প্রধান স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রধানদের নিয়ে মঙ্গলবার দিল্লিতে বৈঠকে বসতে চলেছে এই কমিটি।
সূত্রের খবর হাইপাওয়ার কমিটি বৈঠকেই যোগ দিতে দিল্লি যাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে শুক্রবার রেড রোডের ধরণা মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, “আমি ৫ তারিখ সন্ধ্যায় দিল্লি যাবো। ৬ তারিখে দুপুর দু’টোর সময় ‘ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন’ কমিটির বৈঠক আছে। সেটা সেরে ওইদিনই সন্ধ্যায় কলকাতায় ফিরে আসবো। ৮ তারিখ আমাদের বাজেট আছে।” তবে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে নিজের ও দলের মত কি, তা ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১১ জানুয়ারি এই কমিটির সচিব ডঃ নীতেন চন্দ্র কে চিঠি লিখে নিজের আপত্তির কারণ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। দুই পাতার চিঠিতে কেন তিনি এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করছেন, তা উল্লেখ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। গত ১১ তারিখ এক সাংবাদিক সম্মেলনে এবং তারপরেও বেশ কয়েকটি জনসভায় এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত (এক দেশ, এক নির্বাচন) এই মুহূর্তে আমাদের দেশের ক্ষেত্রে আর কোন ভাবেই বাস্তবোচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দল ক্ষমতায় আসে। একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন করতে গেলে হয় কোনো রাজ্যের বিধানসভা সময়ের আগেই ভেঙে দিতে হবে অথবা মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তাকে টেনে নিয়ে যেতে হবে। আবার কোনও কারণে লোকসভা ভেঙে গেলে তখন সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্য বিধানসভাকেও ভেঙে দিতে হবে, প্রয়োজন না থাকলেও। এতে জনমতকে অপমান করা হবে বলেই মত মমতার। মঙ্গলবার দিল্লির বৈঠকে সেই কথাটাই আরও একবার তিনি জানিয়ে আসবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। এদিকে এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে তাতে দেশের প্রধান ৪৭ টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে মাত্র ২৬/২৭ টি দলই তাদের মত এই কমিটিকে জানিয়েছে। এরমধ্যে এআইএডিএমকে, বিজু জনতা দল এবং মহারাষ্ট্রাবাদী গোমন্তক পার্টি এই মতের সমর্থক বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রের প্রধান শাসকদল বিজেপি বা বলা ভালো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অনেকদিন ধরেই একসঙ্গে ভোটের পক্ষে মত দিয়ে আসছেন। উল্টোদিকে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, বাম দলগুলো, এনসিপি এই মতের বিরুদ্ধে নীতিগতভাবে না হলেও, দেশের পরিস্থিতি বিচারে এই মুহূর্তে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ করা কোনোমতেই সম্ভব নয় বলেই মনে করে। তাছাড়া এই সিদ্ধান্ত নিতে গেলে সংবিধান সংশোধন এর প্রক্রিয়াও যথেষ্ট জটিল। ফলে ২০২৪ তো নয়ই, ২০২৯ এর আগে এদেশে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।