Bankura painted in three colors! What will be the 24 colors? The politics of Rangamati has attracted attention
রাজ্য
দ্যা হোয়াইট বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক:
লাল, সবুজ এবং গেরুয়া রঙে রাঙিয়ে ছিল
কংসাবতী, দামোদর এবং দ্বারকেশ্বরের মতো নদ-নদী দিয়ে চারদিকে ঘেরা রাঙামাটির জেলা বাঁকুড়া। ২০২৪ সালের রং কি হবে উত্তর দেবে জনগণ।
লাল রং মুছে ফেলতে ২০১৪সালে বাঁকুড়া জেলার মানুষ সবুজ রঙকে বেছে নিয়েছিল। মানুষ দুহাত ভরে অভিনেত্রী মুনমুন সেনকে আশীর্বাদ করেছিল। কিন্তু ২০১৯সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বর্ষিয়ান নেতা রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে প্রার্থী করে। বহিরাগত কেন এই প্রশ্নে দলের বহু কর্মী সমর্থকরা ভোটে প্রার্থীর হয়ে সেভাবে নজরে পড়েনি। মানুষ ভিডিও রং কে বেছে নিয়ে ডাক্তার সুভাষ সরকারকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করিয়েছিলেন।
কংসাবতী, দামোদর এবং দ্বারকেশ্বরের মতো নদ-নদী দিয়ে চারদিকে ঘেরা রাঙামাটির জেলা বাঁকুড়া। একদা লাল দুর্গ বলে পরিচিত ছিল। ১৯৮০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত একটানা ৭ বারের সংসদে বর্ষীয়ান সিপিআইএম নেতা বাসুদেব আচারিয়া। ২০১৪ সালে তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী মুনমুন সেনের কাছে হেরে যান প্রবীন ওই বামপ্রার্থী। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্রে আর মুনমুন সেনকে প্রার্থী করেনি ঘাসফুল শিবির। কেন্দ্রটিতে নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে তৃণমূল প্রার্থী করে কলকাতার সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের কাছে হেরে যান তিনি।
জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে রয়েছে গভীর জঙ্গল। জেলার কোনায় কোনায় অনুন্নয়নের ছাপ স্পষ্ট। একসময় এই অনুন্নয়নকে হাতিয়ার করে মাওবাদীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। জেলার আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছিল বারুদের গন্ধ। তবে সে সবকিছুই আজ অতীত। এখন রাজনীতির অন্যতম নজরকাড়া কেন্দ্র বাঁকুড়া।
বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। পুরসভা এলাকাও রয়েছে। একদা মল্লরাজাদের রাজধানী বিষ্ণুপুরের ইতিহাস বহু প্রাচীন। জড়িয়ে রয়েছে মল্ল রাজবংশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস। ১৯৫১ সালে এই লোকসভা কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত। ১৯৫০ সালে নির্বাচনী কোটা কার্যকর হওয়ার পর এ জেলা থেকে একাধিক তফসিলি জাতি এবং উপজাতির নেতা উঠে এসেছেন। এর আর্থ সামাজিক প্রভাবও পড়েছে। এই লোকসভা কেন্দ্রে বসবাসকারী বেশীরভাগ ভোটার কৃষিজিবী, অসংগঠিত শ্রমিক। বর্ষার বৃষ্টির উপর এজেলায় নির্ভর করে কৃষিকাজ। ডোকরা,টেরাকোটা এবং হস্তচালিত তাঁত শিল্পের মতো কুটিরশিল্পের সঙ্গে জড়িত বহু মানুষ। এছাড়া এজেলার মেজিয়া এবং শতালতোড়া মতো খনি অঞ্চলও রয়েছে। যেখানে কয়লা উত্তোলন, পাথর খাদানে কাজ করেন বহু মানুষ। হাতেগোলা কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা রয়েছে ঠিকই। তবে সেগুলি ধুঁকছে, প্রায় বন্ধের মুখে।
বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭ কেন্দ্র- বাঁকুড়া, ছাতনা, শালতোড়া, রানিবাঁধ, রায়পুর, তালডাংরা আর পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর। পুরসভা ২টি- বাঁকুড়া আর রঘুনাথপুর পুরসভা।
রাজনৈতিক চিত্র
বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রটি এককালে বামেদের দুর্ভেদ্য দুর্গ বলে পরিচিত ছিল। ১৯৮০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত একটানা এই লোকসভা কেন্দ্রটি থেকে সংসদে গিয়েছেন বামপ্রার্থী বাসুদেব আচারিয়া। তবে ২০১৪ সালে তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী মুনমুন সেনের কাছে হেরে যান প্রবীন ওই বামপ্রার্থী। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্রে আর মুনমুন সেনকে প্রার্থী করেনি ঘাসফুল শিবির। কেন্দ্রটিতে নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে তৃণমূল প্রার্থী করে কলকাতার সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের কাছে হেরে যান তিনি। তার পর থেকে এই এলাকায় ক্রমেই একের পর এক বিধানসভা কেন্দ্রে ফুটতে শুরু করে পদ্মফুল। বর্তমানে লড়াইটা বিজেপি বনাম তৃণমূলের লড়াই।
২০১৪সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল@
২০১৪ সালে তৃণমূলের মুনমুন সেনের প্রাপ্ত ভোট ৪ লক্ষ ৮২ হাজার ৯১১টি। সিপিআইএমের প্রার্থী বাসুদেব আচারিয়ার প্রাপ্ত ভোট ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার ৪০০। বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার প্রাপ্ত ভোট ২ লক্ষ ৫০ হাজার ৮৫৩টি।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ফলাফল@
২০১৯ সালে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রাপ্ত ভোট ৫ লক্ষ ১২২। ভারতীয় জনতা পার্টি র প্রার্থী সুভাষ সরকারের প্রাপ্ত ভোট ৬ লক্ষ ৭২ হাজার ২০২। সিপিআইএমের প্রার্থীর প্রাপ্ত অমিয় পাত্র ভোট ১ লক্ষ ১৪টি।
২০২১সালের বিধানসভা নির্বাচনে ফলাফল@
বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা কেন্দ্র। বাঁকুড়া, ছাতনা, রঘুনাথপুর, এবং শালতোড়ার মতো বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে জয়ী হয় বিজেপি। বাকি তিনটি বিধানসভা জঙ্গলমহলের রানিবাঁধ , রাইপুর এবং তালডাংরায় নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে সফল হয় তৃণমূল।
২০২৪ এর বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে ত্রিমুখী লড়াই। বিজেপির সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডাক্তার সুভাষ সরকার।সিপিআইএমের প্রার্থী আইনজীবী নীলাঞ্জন দাশগুপ্তকে। তৃণমূলের প্রার্থী প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি এবং তালডাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী।