December 13, 2024 9:57 pm

২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

December 13, 2024 9:57 pm

২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

High Court of Humanity: কেন্দ্রীয় সরকারের উদাসীনতার জন্য কখনই মা হারা মেয়েকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Pinterest
Pocket
WhatsApp

A motherless girl can never be deprived of her rights because of the apathy of the central government, Justice Raja Shekhar Mantha.

রাজ্য

দ্যা হোয়াইট বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক;

কেন্দ্রীয় সরকারের জল সম্পদ বিষয়ক দফতরের (inland water wage) কর্মরত ছিলেন বেহালার পন্নশ্রীর বাসিন্দা বর্ণালী দে। ২০০৯ সালে বর্ণালীদের স্বামী রাজু দে স্ত্রী এবং তাদের একমাত্র কন্যা অনুষ্কা দে ছেড়ে চলে যান। ছোট্ট অনুষ্কা কে নিয়ে বর্ণালী দে একাই থাকতেন তাদের পর্ণশ্রী বাড়িতে।

কর্মরত অবস্থায় বর্ণালী দে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। নিজের চিকিৎসা এবং একমাত্র মেয়ের পড়াশোনা বেশ খানিকটা তাকে অসহায় করে তুলেছিল। ২১শে মে ২০২৩ সালে বর্ণালী দে মারা যান। যে সময় বর্ণালী দেবী মারা যান সেই সময় তাদের একমাত্র কন্যা অনুষ্কার বয়স ছিল ১৯ বছর। মায়ের হঠাৎ মৃত্যুতে অথৈ জলে পড়ে যান কলেজছাত্রী অনুষ্কা।

বর্ণালী দে যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের জল সম্পদ দপ্তরে কর্মরত ছিলেন তাই তার সমস্ত মৃত্যু কালীন সরকারী ভাতা ও প্রাপ্য ও মাসিক পেনশনের জন্য আবেদন জানায় অনুষ্কা। কারণ তার মা তার নামেই ১০০%শতাংশ নমিনি করে গিয়েছিলেন। মায়ের অফিস থেকে অনুষ্ঠাকে বলা হয় বর্ণালী দেবীর স্বামী অর্থাৎ অনুষ্কার বাবা স্ত্রীর মৃত্যু কালীন সরকারী সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার আবেদন জানিয়েছে। কারণ সেও একজন অংশীদার। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছিলেন যে তার একমাত্র কন্যাকে যাতে তার মায়ের কোন কিছুই না দেওয়া হয়।

যে বাবা জন্ম দেওয়ার পরেই তার মা এবং তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল ১৯ বছর বাদে বাবার দাবির খবর শোনার পর অনুষ্কা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। মায়ের অফিস থেকে জানানো হয় ২০০১ সালে বর্ণালী দে তার স্বামী ও বর্ণালী দেবীর মায়ের নামে ৫০% শতাংশ করে নমিনি করে গিয়েছিলেন। কারন সে সময় অনুষ্কার জন্ম হয়নি ২০০৩ সালে অনুষ্কার জন্মের পরেই তার বাবা রাজু দে স্ত্রী এবং একমাত্র কন্যাকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। যে কারণে ২০১৯ সালে বর্ণালী দে তার একমাত্র মেয়েকে ১০০ শতাংশ নমিনি করে যান কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারণে বর্ণালী দেবীর অফিস কর্তৃপক্ষ অনুষ্কা কে ১০০ শতাংশ নমিনি হিসেবে মানতে নারাজ অসহায় অনুষকা অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলাকালীন অনুষ্কার বাবা সেই মামলার বিরোধিতা করে হাইকোর্টে দ্বারস্থ হন। এবং অনুষ্কার মায়ের অফিস কর্তৃপক্ষ তারা আদালতে হলফনামা দিয়ে জানে যে বর্ণালী দেবীর ফাইলে ১০০ শতাংশ নমিনী কাগজ খুঁজে পেলেও অনুষ্কা কে একশ শতাংশ নমিনি দেওয়ার আবেদনটি সার্ভিস বুকে লেখা হয়নি।

বিচারপতি রাজা শেখার মান্থার এজলাসে মামলার শুনানিতে অনুষ্কার পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান একজন কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনসত্ব দফতরের কর্মচারী তার নমিনি পরিবর্তন করলে কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব সার্ভিস বুকে তা অন্তর্ভুক্ত করা। কিন্তু এক্ষেত্রে একটি অসহায় মেয়েকে তার মায়ের মৃত্যুর পর তার সরকারি ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। যদিও তার মা মৃত্যুর আগেই মেয়ের নামে ১০০%নমিনির আবেদন সরকারি দফতরে জমা করেছে। অথচ যে বাবা জন্মের পর থেকেই তাকে এবং তার পরিবারকে ছেড়ে চলে গেছে অথচ তার স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার অধিকার ও প্রাপ্য বুঝে নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করছে এবং কর্তৃপক্ষ সেই আবেদনের ভিত্তিতে মামলাকারী অর্থাৎ অনুষ্কার সমস্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখছে যা সম্পূর্ণ বেআইনি।

বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বিস্ময় প্রকাশ করে জানান কেন্দ্রীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি দপ্তর যেখানে অফিস ফাইলে ১০০ শতাংশ নমিনির পরিবর্তনের রেকর্ড রয়েছে অথচ অফিস কর্তৃপক্ষ তা তার সার্ভিস বুকে অন্তর্ভুক্ত করল না যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। অবিলম্বে কর্তৃপক্ষ তার সংশোধন করে মামলাকারী কে মৃত মায়ের সমস্ত রকম প্রাপ্য ও সুযোগ-সুবিধা আগামী দু মাসের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ যদি সেই নির্দেশ অন্যতা হয় তাহলে ৮% সুদ সহ মিটিয়ে দিতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Pinterest
Pocket
WhatsApp

Related News

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top