18 years of youth have passed in the court premises in a legal battle of 225 rupees. Finally, at the age of 53, he was freed from the curse.
রাজ্য
দ্যা হোয়াইট বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক:
বরাহনগরের বাসিন্দা উত্তম কুমার ঠাকুর পেশায় একজন বাস কন্ডাক্টর। সিএসটিসির বরাহনগর কাশিপুর ডিপোতে কর্মরত ছিলেন। ২০০৫ সালের এক সকালে বাসের প্রথম যাত্রীকে টাকা খুচরো টাকা দেওয়ার জন্য বাসের চালকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা খুচরো করেন তিনি। কিছুদূর বাস যাওয়ার পর মাঝ পথে সিএসটিসির কর্তব্যরত আধিকারিকরা চেকিংয়ের জন্য বাসে ওঠেন। এবং আধিকারিকরা ২২৫ টাকা ক্যাশ বাক্সে বেশি পান তারা। কেন এই টাকা টিকিট বিক্রির থেকে বেশি হলো উত্তম বাবুর কাছ থেকে জানাতে চেয়েছিলেন। উত্তম বাবু তাদের জানিয়েছিলেন ৫০০ টাকা ড্রাইভারের কাছ থেকে খুচরো নিয়েছিলেন।
সিএসটিসির আধিকারিকরা উত্তম কুমার ঠাকুরের ব্যাগ বাজেয়াপ্ত করেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে শো কজ করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু বিভাগীয় তদন্তের সময় তৎকালীন সেই বাস ড্রাইভারকে কেন কন্ডাক্টারের কাছে বাড়তি এই টাকা এলো সেই প্রসঙ্গে কোন জিজ্ঞাসাবাদী করেননি কর্তব্যরত আধিকারিকরা বলে অভিযোগ। একতরফাভাবে উত্তম বাবুকে শুধু দোষী সাব্যস্তই নয় তার বেতন কমিয়ে দেওয়া এবং তার সমস্ত বৈধ ভাতা বন্ধ করে দেওয়ারও নির্দেশ দেন।
সি এস টি সির চেয়ারম্যানের কাছে অ্যাপিল করেন উত্তমবাবু। কিন্তু চেয়ারম্যান বা তার দপ্তর উত্তমবাবুর আপিল আবেদন শুনানি না করেই বিষয়টি দীর্ঘদিন ফেলে রাখেন বলে অভিযোগ। এরপরেই ২০০৬ সালে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন উত্তম বাবু। হাইকোর্টের নির্দেশেই সিএসটিসির অ্যাপিলেট সাইড উত্তম বাবুর বিরুদ্ধে সিএসটিসির আধিকারিকদের যে নির্দেশ সেটাই বহাল রেখেছিল অ্যাফিলিয়েট সাইড। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই পুনরায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন উত্তম বাবু।
হাইকোর্টের বিচারপতি পার্থ সারথী চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে উত্তম কুমার ঠাকুরের পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান, উত্তমবাবুকে উপযুক্ত নথিপত্র না দিয়েই তার বক্তব্য না শুনে, একতরফা ভাবে সিএসটিসি কর্তৃপক্ষ তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। শুধু তাই নয় সেদিন ঘটনার সময় উপস্থিত বাস ড্রাইভারকে কোনো রকম জিজ্ঞাসাবাদ করেনি সিএসটিসির অথচ উত্তম বাবুকে দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া হয়। বলে অভিযোগ। ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভিস রুলের ৫২ নম্বর ধারা না মেনেই একতরফাভাবে উত্তমবাবুর মাইনে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তাকে ১৫ হাজার টাকা বেতন কম দেওয়া হচ্ছে। হাইকোর্ট পরিবহন দপ্তরকে বারবার উত্তম ঠাকুরের ফাইল কোর্টে তলব করলেও পরিবহন দপ্তর তার কোন ফাইলই
আদালতে পেশ করতে পাচ্ছে না কেন সেই প্রশ্নও তুলেছেন আশীষ বাবু। তাহলে যাকে দোষী সাব্যস্ত করা হলো আশ্চর্যজনকভাবে তারই ফাইল হারিয়ে গেল সুতরাং সিএসটিসি কর্তৃপক্ষ স্বচ্ছ ভাবে এই প্রক্রিয়া করেনি তাই তার বিরুদ্ধে ওটা সমস্ত অভিযোগ খারিজ খেয়ে দেওয়া হোক।
রাজ্য পরিবহন দপ্তরের পক্ষের আইনজীবী নয়নচাঁদ বিহানি আদালতে জানান, সমস্ত পরিবহন দপ্তরের নিয়ম মেনে উত্তমবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিন্তু কিভাবে ফাইল হারিয়ে গেল সে বিষয়ে তিনি আদালতকে স্পষ্ট করে জানাতে পারেননি।।
বিচারপতি পার্থসারথী চ্যাটার্জী নির্দেশ দেন উত্তম কুমার ঠাকুরের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বেআইনি বলে খারিজ করে দেন। পাশাপাশি তার যে ২০০৫ সাল থেকে বেতনের ১৫০০০ টাকা কম দেওয়া হচ্ছিল তা অবিলম্বে আগের বেতন পরিকাঠামোয় ফিরিয়ে দিতে হবে। এবং তিনি যে বর্ধিত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেনএতদিন তা ৩ মাসের মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি।