Oxygen is being emitted from minerals in the deep seabed in the dark. Evidence of oxygen production.
মুনমুন রায় ,প্রতিনিধি :নেচার জিওসায়েন্সে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় জানা গেছে এক অদ্ভুত তথ্য , প্রশান্ত মহাসাগরের ক্লারিওন-ক্লিপারটন জোন (সিসিজেড) সমুদ্রতলের 4,000 মিটার (প্রায় 13,000 ফুট) নিচে জমা খনিজ থেকে অক্সিজেন নির্গত হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা দীর্ঘকাল ধরে মনে করতেন শুধুমাত্র উদ্ভিদ এবং শৈবাল-সহ সালোকসংশ্লেষী প্রাণীরাই পৃথিবীতে অক্সিজেন তৈরি করতে পারে। অর্থাৎ, আলো ছাড়া অক্সিজেন তৈরি অসম্ভব বলে মনে করা হত। কিন্তু, পৃথিবীর গভীর-সমুদ্রতলে, যেখানে সূর্যের আলো পৌঁছতে পারে না, সেখানে কি অক্সিজেন তৈরি হতে পারে?
এতদিন পর্যন্ত এর উত্তর ছিল, না। কিন্তু মহাসাগর বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু সুইটম্যান প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে একটি অদ্ভুত ঘটনার সম্মুখীন হন। তিঁনি দেখেন গভীর সমুদ্রের নীচেও, সম্পূর্ণ অন্ধকারে ধাতব খনিজের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তৈরি হচ্ছে রহস্যময় ‘ডার্ক অক্সিজেন’ বা ‘অন্ধকার অক্সিজেন’।
তিনি প্রাথমিকভাবে ভেবেছিলেন যে তার পর্যবেক্ষণ সরঞ্জাম ঠিকঠাক কাজ করছে না । তার সেন্সরগুলি সূর্যালোক ছাড়াই 13,100-ফুট-গভীর সমুদ্রতটে অক্সিজেন উৎপাদনের ইঙ্গিত দিচ্ছিলো। প্রফেসর সুইটম্যান তার ছাত্রদের নির্দেশ দিয়েছিলেন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতকারকের কাছে সেন্সরগুলি ফেরত দিতে কারণ তারা ভুল তথ্য দিচ্ছে । কিন্তু নির্মাতা ধারাবাহিকভাবে নিশ্চিত করেছেন যে সেন্সরগুলি সঠিকভাবে কাজ করছে।
সম্প্রতি, নেচার জিওসায়েন্স জার্নালে “অতল সমুদ্রতলে অন্ধকার অক্সিজেন উৎপাদনের প্রমাণ” নামে এক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, সালোকসংশ্লেষ ছাড়াও অক্সিজেন উৎপাদন হচ্ছে, আর সেই অক্সিজেন টিকিয়ে রেখেছে গভীর সামুদ্রিক জীবনকে, যারা সম্পূর্ণ অন্ধকারে বেঁচে থাকে। তবে, এই ‘অন্ধকার অক্সিজেনে’র সন্ধান অনেক আগেই পাওয়া গিয়েছিল। ২০১৩ সালে, স্কটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর মেরিন সায়েন্সের বিজ্ঞানী, অ্যান্ড্রু সুইটম্যান। ফিল্ডওয়ার্কের সময়, সুইটম্যান এবং তার সহযোগীরা ক্লারিওন-ক্লিপারটন জোনে সমুদ্র-তলের ইকোসিস্টেমগুলি অধ্যয়ন করছিলেন। এই স্থানে, প্রাকৃতিকভাবে সমুদ্রের তলদেশে বেড়ে ওঠা খনিজ আছে বলে মনে করা হয়। তারই সন্ধানে গিয়েছিলেন তাঁরা। সেই সময়ই তাঁরা সেখানে ‘অন্ধকার অক্সিজেন’-এর সন্ধান পেয়েছিলেন
সুইটম্যান বলেছেন, “এখন আমরা জানি, গভীর সমুদ্রেও অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। যেখানে কোনও আলো নেই। আমি মনে করি, বায়বীয় জীবন কোথায় শুরু হতে পারে, আমাদের এই প্রশ্নগুলো পুনরালোচনা করা দরকার।”