The White House informed about the conversation between Biden and Modi about the situation in Banglades
মুনমুন রায় প্রতিনিধি: বুধবার আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত অন্যতম উপদেষ্টা জন কিরবি সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, বাংলাদেশের মানুষের ‘সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা’ নিয়ে মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন বাইডেন। গত ২৬ অগস্ট বাইডেনের সঙ্গে ফোনে কথার পরে মোদী এক্স পোস্টে লিখেছিলেন, ‘‘বাইডেনের সঙ্গে আজ ফোনে কথা হয়েছে। ইউক্রেনের পরিস্থিতি-সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে আমাদের বিশদ মতবিনিময় হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছি এবং দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব দিয়েছি। জোর দিয়েছি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপরে।’’
কিন্তু হোয়াইট হাউসের সরকারি বিবৃতিতে সে প্রসঙ্গের কোনও উল্লেখই ছিল না। তাই মোদীর দাবি ঘিরে উঠছিলো প্রশ্ন।যখন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলেন, যখন ভারত বিরোধী স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠল বাংলাদেশ, তখন কিন্তু ভারতকে নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা ছিল না আমেরিকার। বরং আমেরিকার পছন্দের ইউনূস যোগে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক কতটা পোক্ত করা যায় সেদিকে বেশি নজর দিচ্ছিল বাইডেনের দেশ। এমনকি চীনা আগ্রাসন নিয়ন্ত্রণ করতেও ভারতকে যে দরকার সেটাও ভুলতে বসেছিল আমেরিকা।
কিন্তু তারপর হঠাৎ কি এমন হলো, যাতে নয়াদিল্লির জন্যে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলো, হোয়াইট হাউস? হঠাৎ করে আমেরিকার রেড লিস্টে বাকি কুড়িটা দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের নাম যোগ করা হোলো। আমেরিকার নাগরিকদের জন্য ওই ২১টা দেশকে রিস্কি হিসেবে ঘোষণা করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। বেসামরিক অস্থিরতা, অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকির কারণে বাংলাদেশ ভ্রমণ যে আপাতত সেফ হবে না সেটা খুব ভালো করেই জানে আমেরিকা। তাই সন্ত্রাস সম্পর্কে সতর্কবার্তা ঘোষণা করে আপাতত বাংলাদেশে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
অথচ সেই বাংলাদেশেই সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর একের পর এক নিপীড়ন এবং অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে। এখনও অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরেও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। হিন্দুদের মন্দির, বাড়ি, দোকানপাটে হচ্ছে আক্রমণ। প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মোঃ ইউনুস এর চোখের সামনে সবটা ঘটে যাচ্ছে। তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গড়ার ডাক দিয়েছে। কিন্তু শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ইউনুস এর কড়া হুঁশিয়ারি কাজে আসছে কি?
যে দেশটার সাথে সবচেয়ে দীর্ঘ সীমান্ত ভাগ করছে ভারত সেখানেই সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর এমন অত্যাচারের ঘটনা নয়াদিল্লীর উদ্বেগ বাড়িয়েছে। কিন্তু আমেরিকার বুকে কোন হেলদোল দেখা যায়নি। হিন্দুদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় মুখ খুলতেও দেখা যায়নি আমেরিকা কে। বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকা যাতে কোন পদক্ষেপ নেয় সেই বিষয়ে আর্জি গেছিল হোয়াইট হাউসে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কেন চুপ?
প্রশ্ন তোলা হয়েছিল ওই সংগঠনের তরফে। তাহলে কি বাধ্য হয়ে চাপে পড়ে একটা সময় পর, বাংলাদেশের বিষয়ে ভারত সহ একাধিক দেশের সঙ্গে কথা বলা শুরু করে বাইডেনের দেশ। গোটা বিষয়টা দেখে শুনে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলেছিলেন নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির কারণেই আমেরিকার ভারত প্রীতি ফের জেগেছে। ভবিষ্যতে কিভাবে চীনের আগ্রাসন কি ভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে সেই কথা ভাবনা চিন্তা করেই আবারো ভারতের সাথে সম্পর্ক ঠিক করে নেওয়ার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। আবার বিশেষজ্ঞদের আরেকাংশের মতে, মোঃ ইউনুসের উপর আমেরিকার ভরসা থাকলেও, হাসিনাকে সরিয়ে বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্বভার নিলেও, ভারত কে চটিয়ে বা অশান্ত করে বাংলাদেশ প্রীতি বজায় রাখা যাবেনা তা বুঝে গেছেন বাইডেন।